সফরে থাকাকালীন নামাযের বিধান কী

সফর অবস্থায় ফরয ও ওয়াজিব নামায মাফ হয় না। তা পড়া আবশ্যক। তবে এতটুকু সুযোগ রয়েছে যে, চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামাযগুলো চার রাকাতের বদলে দুই রাকাত পড়তে হয়। ইচ্ছাকৃত চার রাকাত পড়লে গোনাহগার হবে। যেমন যোহর, আসর ও ইশার নামায চার রাকাতের বদলে দুই রাকাত পড়তে হয়। বাকি ফজর ও মাগরিবের ফরয নামায সম্পূর্ণ পড়তে হয়। এছাড়া বিতর নামায মাফ হয় না। সুতরাং বিতর তিন রাকাতও পড়তে হবে। তবে সুন্নাত নামায না পড়লেও কোন সমস্যা নেই। গোনাহ হবে না। তবে নিরাপত্তা ও সময়ের তাড়া না থাকলে পড়াই উত্তম।

মুসাফিরের নামায:

যখন কোন ব্যক্তি ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়ত করে নিজ এলাকা থেকে বের হয়ে যায়, তখন থেকেই শরী, যাতের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হিসাবে গণ্য হয়। গন্তব্য স্থলে পৌঁছানোর পূর্বে বা সেখানে পৌঁছে ১৫ দিন বা তার অধিক কাল থাকার নিয়ত করার পূর্ব পর্যন্ত এবং পুনরায় নিজের বাসস্থানে পৌঁছার পূর্ব পর্যন্ত তাকে ফরয নামায কসর পড়তে হয়। এই কসর পড়া ওয়াজিব।

১. কসর আদায়ের নিয়ম:

মুসাফির একা নামায পড়লে বা ইমাম হলে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাযে কসর পড়তে হয় অর্থাৎ যোহর আসর ও এশার নামায দুই রাকাত করে আদায় করবে। ফজর ও মাগরিব ফরজ নামায অপরিবর্তিত থাকবে।

২. ইমাম সাহেব যদি মুর্কীম হনঃ

ইমাম সাহেব যদি মুকীম হন, আর মুক্তাদী মুসাফির হয়, তাহলে মুকীম ইমামের পিছনে ইকতিদা করার কারণে মুসাফির মুক্তাদীকে

ও চার রাকাত সম্পূর্ণ নামায পড়তে হয়।

৩. যদি ইমাম সাহেব মুসাফির হনঃ

যদি ইমাম সাহেব মুসাফির হন মুক্তাদী গণও মুসাফির তাহলে চার রাকাত ফরজ নামায সকলেই দুই রাকাত করে পড়বেন। যদি ইমাম সাহেব মুসাফির হন আর মুত্তাদীগণ মুকিম হয় তাহলে মুসাফির ইমাম সাহেব দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরাবেন আর মুকিম মুক্তাদীগণ বাকি দুই রাকাত কিরাত ছাড়া নিজে নিজে পড়ে নিবেন।

৪. যে সকল লোক সর্বদা পরিবহনে চাকরি করেনঃ

যে সকল লোক সর্বদা পরিবহনে চাকরি করেন (যেমন- বাসে, লঞ্চে, স্টিমারে, রেলগাড়িতে, উড়োজাহাজ, বা পানির জাহাজে) এবং তা নিজ বাড়ি থেকে ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার দূরবর্তী হয় তারা সফর অবস্থায় সর্বদা নামায কসর পড়বে। যখন বাড়িতে ফিরবে তখন শুধু পূর্ণ নামায পড়বে।

৬. সফর অবস্থায় জামাতে নামায আদায়:

স্বাভাবিক অবস্থায় জামাতে নামায পড়া ওয়াজিব। সফর অবস্থায় জামাতের হুকুম তার জন্য শিথিল হয়ে মুস্তাহাব হয়ে যায়। তবে সফর অবস্থায় যদি কোন প্রকার পেরেশানী না থাকে এবং স্বস্থির অবস্থায় থাকে তাহলে জামায়াতে নামায পড়া বাঞ্চনীয়। তবে যদি কোন ব্যস্ততা থাকে যেমন গাড়ি ছেড়ে দিবে বা সাথীরা তাকে রেখে চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে ওই অবস্থায় জামাত ছেড়ে দেওয়ার অনুমতি রয়েছে।

৭. কসর নামাজের কাযা আদায়:

সফর অবস্থায় ছুটে যাওয়া নামায মুকীম অবস্থায় কাযা পড়ার সময় কসর করতে হবে, পূর্ণ নামায পড়া যাবে না। তেমনি ভাবে মুকীম অবস্থায় ছুটে যাওয়া নামায সফরে আদায় করলে পূর্ণ নামায পড়তে হবে।

সংগৃহীত

ফাতাওয়ায়ে রাহমানিয়া

মুফতী মাওলানা মনসূরুল হক